কান্তা নবী | মঙ্গলবার, ১১ জুলাই ২০২৩ | প্রিন্ট
পিতার শৈশব
কান্তা নবী
দরবেশ শেখ আউয়ালের রক্তবীজ
মধুমতি পার হয়ে বাইগার ছুঁয়েছে ৷
সারি সারি হিজল-তাল-তমাল ছায়া সুনিবিড় ছবির মতো
দাঁড়িয়ে আছে নদীর ধারে অতন্দ্র পাহারায়;
বুনোফুলের ঝোঁপ আর কাশবন নদীর আয়নায়
নিজের ছায়া ফেলে নিজেই হেসে ওঠে জলের সাথে
যেনো শিল্পির রঙতুলিতে আঁকা গ্রাম
টুঙ্গিপাড়া নাম;
১৭ মার্চ বুধবার এখানেই সায়েরা খাতুনের কোল জুড়ে আসে
এক আলোর শিশু — শেখ মুজিবুর রহমান;
নানার ভবিষ্যদ্বাণী — এশিশু জগৎ জোড়া হবে খ্যাত ৷
বাবা-মায়ের আদরের ধন — ডাকতেন তাকে খোকা নামে
শৈশবের চঞ্চলতায় নেচে উঠতো গাছের শাখা
ধানখেত বেয়ে এ-হাওয়া ছড়িয়ে যেতো দূরে আরো দূরে;
মেঠোপথের ধুলি-কাদা মেখে বাইগারে ঝাঁপ দিলে
ঢেউয়েরা হেসে উঠতো কলতানে;
আর এভাবে তার মমতা মিশে গেছে মধুমতি হয়ে
পদ্মা-মেঘনা-যমুনা — বাংলার তেরোশত নদীর জলে
মৃত্তিকার কণায় কণায় ৷
দরিদ্র সতীর্থদের জন্য সে নেমে পড়তো
প্রতি রবিবারের মুষ্টি ভিক্ষায়;
শীতার্তকে নিজের গায়ের চাদরখানা দিয়ে
সারাটা পথে হাড়কাঁপানো শীতে কাঁপতে কাঁপতে ঘরে ফিরেছে সে;
এক বর্ষণমুখর দিনে সতীর্থকে নিজের ছাতাখানি দিয়ে দিয়েছিল
আহা! তার গায়ে কি বৃষ্টি লাগে না!
সে কি ভিজে যায় না তুমুল বৃষ্টিতে!
এতো ছোট্ট শিশু!
এ-বিশাল উদারতা শিখেছিল কোথায়!
আবহমান বাংলায় মাছরাঙার মাছশিকার
তাকে মুগ্ধ করেছিল বার বার;
পোষা শালিক আর ময়নাকে শিখিয়েছিল
শিষদেয়া, কথাবলা;
কী কথা! পাখিদের উত্তরপুরুষ মনে রেখেছে কি সেই সব!
কে জানতো!
একদিন ডিমাডাঙ্গা স্কুল পেরিয়ে এ-শিশুর নাম স্পন্দিত হবে
পৃথিবীর কোটি কোটি প্রাণে ৷
শিক্ষার আলোর ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।
Posted ৭:৪৫ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ১১ জুলাই ২০২৩
শিক্ষার আলো ডট কম | শিক্ষার আলো