খায়রুন নাহার লিপি | মঙ্গলবার, ২৪ আগস্ট ২০২১ | প্রিন্ট
গত বছরের মার্চ থেকে বৈশ্বিক মহামারী করোনায় আতঙ্কে জনমনে তৈরি হয়েছে এক ভীতিকর পরিস্থিতি। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় ২০২০ সালের ১৭ মার্চ থেকে বাংলাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। যার ফলে, আনুষ্ঠানিক শিক্ষা প্রক্রিয়া মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এই ভয়াবহ অবস্থা মোকাবেলায় বাংলাদেশের দূরদর্শী প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা দক্ষতার সাথে নানান পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন এবং তার সুদুরপ্রসারী চিন্তাধারার কারণে দ্রুততম সময়ে বাংলাদেশের মানুষ করোনা ভ্যাকসিন দিতে পারছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দেয়া তথ্যমতে করোনাভাইরাস দ্রুততর সময়ে নির্মূল হবে না বরং অনির্দিষ্টকাল এই ভাইরাসের সাথে আমাদেরকে বসবাস করতে হবে। তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে জীবন এবং জীবিকার প্রয়োজনে আমাদেরকে বাইরে বের হতেই হবে। আশার কথা হলো মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক গৃহীত নানামুখী পদক্ষেপের মাধ্যমে বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণের হার অনেকটা নিয়ন্ত্রণে। বাংলাদেশে স্বাস্থ্য বিভাগের দেয়া তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে গত কিছুদিন ধরেই করোনা সংক্রমণের হার বেশ কমে এসেছে এবং ধারাবাহিক ভাবেই এ হার নিম্নমুখী।
মহামারীর সময় সবচাইতে ক্ষতিগ্রস্থ খাত হলো শিক্ষা । বর্তমানে এই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া হচ্ছে শিক্ষা খাতের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। দীর্ঘদিন বিদ্যালয় বন্ধ থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা যেমন পাঠ বঞ্চিত হয়েছে তেমনি গৃহবন্দী থেকে খেলাধুলা ও বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গ বঞ্চিত হয়ে শিক্ষার্থীরাও নানা রকম সমস্যায় আক্রান্ত। আশার কথা হচ্ছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি অনুধাবন করেছেন এবং ইতিমধ্যেই বিদ্যালয় চালু করার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা দিয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় মাননীয় সচিব মহোদয় শিক্ষক, কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের প্রতিনিধিদের সাথে দফায় দফায় বৈঠক করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেছেন এবং নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন।
মহামারীর কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও শিক্ষকরা কিন্তু নীরবে বসে নেই। অনলাইনে পাঠদান, সংসদ টেলিভিশন ও রেডিওতে প্রচারিত পাঠের সিডিউল বিতরণ, ওয়ার্ক সিট বিতরণ, ওয়ার্কশীট মূল্যায়ন, শিশু জরিপ, বিদ্যালয়ের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ, বিভিন্ন তথ্য প্রেরণ সহ বিভিন্ন কাজে শিক্ষকদেরকে প্রতিনিয়ত বিদ্যালয়ে এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কাছে যেতে হচ্ছে। এই বিষয়গুলো ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষরা অবগত থাকলেও সমাজের অনেকের কাছে শিক্ষকদের এই সকল কাজের কথা জানা না থাকায় অজ্ঞতাবশত অনেকেই শিক্ষকরা বসে বসে বেতন নিচ্ছে বলে নেতিবাচক মন্তব্য করেন।
শিক্ষকরা শ্রেণিকক্ষে সাবলীল।শিক্ষকেরা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের নিয়ে তাদের পরিচিত আঙ্গিনা বিদ্যালয় এবং শ্রেণিকক্ষে আবারো পূর্বের মত মেতে উঠতে চায়। যেহেতু দীর্ঘদিন বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ ছিল তাই বিদ্যালয়ের শ্রেণি কার্যক্রম চালু হওয়ার পর শিক্ষার্থীদেরকে শ্রেণিমুখি করা সহ নানাবিদ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে শিক্ষকদের। তাছাড়াও বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ব্যবস্থাপনা করোনার সংক্রমণ মোকাবেলাসহ নানাবিধ নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হবে শিক্ষকদের। শুধু তাই নয় বর্তমান পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের কে বিদ্যালয় পাঠানোর জন্য অভিভাবকদেরকে উৎসাহিত করার কাজটিও শিক্ষকদেরকে করতে হবে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার জন্য পরবর্তী পরিস্থিতিতে শিক্ষকদের করণীয় সম্পর্কে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা একান্ত জরুরী।
আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে রক্ষা করার দায়ভার আমাদের শিক্ষকদের।তাই বিদ্যালয় আঙ্গিনায় ফিরে যাওয়াই আমাদের অঙ্গীকার।
শিক্ষার আলোর ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।
লেখক: খায়রুন নাহার লিপি, সহকারী শিক্ষক, মোহাম্মদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঢাকা।
Posted ৫:৩৯ অপরাহ্ণ | মঙ্গলবার, ২৪ আগস্ট ২০২১
শিক্ষার আলো ডট কম | শিক্ষার আলো
আর্কাইভ
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ৪ | ৫ | ||
৭ | ৮ | ৯ | ১০ | ১১ | ১ | ১৩ |
৪ | ১৫ | ১৬ | ১ | ৮ | ১৯ | ২০ |
২১ | ২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ |
২ | ৯ | ৩০ | ৩১ |