মঙ্গলবার ২৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১৬ই বৈশাখ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সহকারী শিক্ষকরা হচ্ছেন শ্রেণিকক্ষের প্রাণ

৩য় শ্রেণির কর্মচারীর অভিশাপ থেকে মুক্তি চাই প্রাথমিক শিক্ষকরা

ডেস্ক রিপোর্ট   |   শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪ | প্রিন্ট

৩য় শ্রেণির কর্মচারীর অভিশাপ থেকে মুক্তি চাই প্রাথমিক শিক্ষকরা

বৈষম্য নিরসনে প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠন সমনন্বয় পরিষদ-এর উদ্যাগে আজ ১৮ অক্টোবর ২০২৪, শুক্রবার, সকাল ১১টায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ‘প্রাথমিক শিক্ষা ও আমাদের প্রত্যাশা’-শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।সেমিনারে প্রবন্ধ উত্থাপন করেন বাংলাদেশ প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সমাজের সভাপতি শাহিনুর আল-আমীন। সূচনা বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. আবুল কাশেম।

সেমিনারে আলোচনা ও বক্তব্য রাখেন- ফকিরচাঁদ কলেজ (কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত) ভারতের সংগীত বিভাগের প্রধান অধ্যাপক উজ্জ্বল বন্দ্যোপাধ্যায়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক প্রফেসর খোরশেদ আলম ভূইয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক এম এম আকাশ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগর অধ্যাপক ও মঞ্জুরি কমিশনেরর সদস্য ড. তানজিমউদ্দিন খান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগর অধ্যাপক (অব.) ও বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির (বাকবিশিস)-এর সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) ড. আজিজুর রহমান, বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অজিত পাল, বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো: বদরুল আলম, বাংলাদেশ প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারী শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. শামছুদ্দিন মাসুদ, বাংলাদেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. আবুল হোসেন, প্রধান শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন, বাংলাদশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. নুরুজ্জামান আনসারী, বাংলাদেশ গ্র্যাজুয়েট প্রাথমিক শিক্ষক সোসাইটির সভাপতি মো. আব্দুল খালেক, নন ক্যাডার প্রধান শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রায়হান আহমদ প্রমুখ।


সমিনারে ফকিরচাঁদ কলেজ (কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয় অÍর্গত) ভারতের সংগীত বিভাগর প্রধান অধ্যাপক উজ্জল বদ্যাপাধ্যায় বলেন, আমার পর্যবক্ষণে বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষকদের অত্যন্ত নিম্ন হারে বেতন-ভাতা প্রদান করা হয়। শিক্ষকদের ক্ষুধার্থ রেখে মানসম্মত শিক্ষা প্রদান সম্ভব নয়। আমি জেনেছি, আমাদের ভারতের তুলনায় শিক্ষকদের অন্যান্য সুবিধাদিও অতি নগন্য। গুণগত প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়ন করতে হলে অবশ্যই রাষ্ট্রকে শিক্ষকদের মর্যাদা নিশ্চিত করতে হবে এবং তাদের আনুষঙ্গিক সুবিধাদি বৃদ্ধি করতে হবে।

সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক (অব.) ও বাংলাদেশ কলেজ বিশ্ববিদ্যালয় (বাকবিশিস)-এর সভাপতি (ভারপ্রাপ্ত) ড. আজিজুর রহমান বলেন, শিক্ষকদের নানা শ্রেণিতে বিভক্ত করা যাবে না। প্রাথমিক শিক্ষকই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকসহ সকল শ্রেণির শিক্ষক এবং মানুষ গড়ার কারিগর। একমাত্র প্রাথমিকের শিক্ষকরা কাঁদামাটিতে ঘষামাজা করে একটি প্রকৃত রপ প্রদান করেন। প্রাথমিক শিক্ষকদের দাবির মধ্যে সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড এবং প্রধান শিক্ষকদের ০৯ম গ্রেড শতভাগ সমর্থন করি। একটি দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা এগিয়ে নিতে মানসম্মত শিক্ষক নিয়োগ প্রদান অতীব জরুরি।


সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক এম এম আকাশ বলেন, প্রাথমিক শিক্ষায় অগ্রগতির জন্য বার্ষিক বাজেটসহ প্রয়াজনীয় বরাদ্দ নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষকদের জন্য আলাদা বেতন কাঠামো তৈরি করতে হবে।

সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ও মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য ড. তানজিমউদ্দিন খান বলেন, শিক্ষা সুরক্ষার জন্য রাষ্ট্রের শিক্ষা বরাদ্দ বাড়াতে হবে। প্রাথমিক শিক্ষাকদের বিশেষ সুরক্ষা প্রদান করতে হবে। প্রাথমিক শিক্ষার প্রতি রাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হবে, যেহেতু প্রাথমিক শিক্ষা হচ্ছে শিক্ষা স্তরের মূল স্তম্ভ। তাই, শিক্ষকদের পেশার সাথে অন্য কোন পেশার তুলনা করা যাবে না।


সেমিনারে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক প্রফেসর খোরশেদ আলম ভূঁইয়া বলেন, প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রস্তাবনা অত্যন্ত যৌক্তিক। বর্তমান প্রাথমিক শিক্ষায় নানা ধরনর বষম্য রয়েছে। সেই বৈষম্য চলমান রেখে একটি অত্যাধুনিক মানসম্মত জাতি গঠন সম্ভব হবে না। এছাড়াও সামাজিক বৈষম্য নিরসনে শিক্ষাকে একমুখী করতে হবে। শিক্ষকদের যথাযথ সম্মান প্রদান না করলে একটি শিক্ষিত জাতি উপহার দেওয়া সম্ভব হবে না।

সেমিনারে অন্যান্য শিক্ষক নেতৃবৃন্দ বলেন, সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেডসহ শতভাগ পদোন্নতি এবং প্রধান শিক্ষকদের ০৯ম গ্রেডে বেতন দিতে হবে। এছাড়াও শিক্ষক সুরক্ষা আইন, শিক্ষকদর পদোন্নতি উচ্চতর গ্রেড প্রদানে নানা জটিলতা রয়েছে এগুলি দ্রুত দূর করতে হবে। তারা আরো বলেন, শিক্ষকদের নিম্ন মানের টিফিন ভাতার বিষয়টিও অযৌক্তিক, এটা অবশ্যই বৃদ্ধি করা প্রয়োজন। সহকারী শিক্ষকরা হচ্ছেন শ্রেণিকক্ষের প্রাণ। তাদের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী রেখে মানসম্মত শিক্ষা আশা করা অর্থহীন। একজন শিক্ষক সহকারী শিক্ষক পদে যোগদান করে সহকারী শিক্ষক হিসাবেই অবসরে যান। এটা খুবই দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত। সহকারী শিক্ষকদের অবিলম্বে ১০ম গ্রেড এবং প্রধান শিক্ষকদর ০৯ম গ্রেড প্রদান করে তাদের তৃতীয় শ্রণির কর্মচারীর অভিশাপ থেকে মুক্তি দিতে হবে।

Facebook Comments Box

Posted ৯:৫৭ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪

শিক্ষার আলো ডট কম |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

এ বিভাগের আরও খবর

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১
১৩১৫১৬
১৯২০২১২২২৩২৪২৫
২৬২৭৩০  
অফিস

চৌগাছা, যশোর-৭৪১০

হেল্প লাইনঃ 01644-037791

E-mail: shiksharalo.news@gmail.com