
মোহাম্মদ জাহির মিয়া তালুকদার | সোমবার, ০২ আগস্ট ২০২১ | প্রিন্ট
মোহাম্মদ জাহির মিয়া তালুকদার
-প্রতিনিধি
তখন ছাত্র জীবনের ঠিক মাঝামাঝি পর্যায়ে অবস্থান করছি । মাধ্যমিক পাশ করেছি মায়ের হাতে রান্না করা গরমভাত খেয়ে , বাবার আদর ও শাসনের মধ্যে থেকে। উচ্চ মাধ্যমিকে ভর্তি হওয়ার সাথে সাথেই স্থায়ীভাবে বাড়ীতে থাকার সুযোগটা হাতছাড়া হয়ে যায় । তবু ও এতদিনে অভ্যাস থেকে নিজেকে বের করে নিয়ে আসতে প্রাণপন চেষ্টা চালিয়ে গেলে ও বাড়ীর বাইরে দুই সপ্তাহের বেশী থাকাটা খুব কঠিন ছিল। বাড়ীতে যাওয়ার তারিখ করলেই তা আর রক্ষা করা হয়ে উঠতো না । একদিন বা দুদিন আগেই বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে যেতাম। আগামী কাল বা পরশুই যখন যাব তাহলে আজকে রওয়ানা দিলে সমস্যা কোথায় , ব্যাপারটা ছিল ঠিক এরকম। সময় ও ঠিক থাকতো না । যখন মন চাইতো তখই বাড়ীর দিকে দে ছুট।
উচ্চমাধ্যমিক পাশ করার পর উচ্চ শিক্ষার ধাপে যখন পা রাখলাম তখনো অভ্যাসটা পরিবর্তন করা খুব কঠিন হয়ে যায়। একই নিয়মে চলতে থাকলো বাড়ীতে আসা যাওয়ার পালা। পকেটের টাকা যখনই শেষ হয়ে যেত বাড়ীতে আসার প্রয়োজন টা তখন বড্ড বেশী অনুভব করতাম। বাড়ীতে আসলেই কখনো বাবা আবার কখনো মা হাত খরচের টাকা দিয়ে বিদায় করে দিতেন । মাঝে মধ্যে নানা অজুহাতে বাড়ীতে দুই একদিন বেশী থাকার চেষ্টা করতাম । চলে গেলে ও বাড়ীর জন্য মনটা সারাক্ষণ ছটপট করতো ।
সময়টা ১৯৯৫ সালের মাঝামাঝি । তখন স্নাতক সম্মান শ্রেণীতে সিলেটের এমসি কলেজে অধ্যয়ন করছি। বাড়ীর মোহ টা তখনো কাটিয়ে উঠতে পারিনি। যখনই বাড়ী যাওয়ার বিষয়টা মাথা আসতো তাৎক্ষণিক রওয়ানা হয়ে যেতাম। সেটা সকাল দুপুর কিংবা সন্ধ্যা হোক না কেন। বাড়ী গিয়ে পৌঁছার পর মনটা পানির মত শীতল হত । বিশাল একটা উত্তেজনা মনে কাজ করতো ।
কলেজ থেকে ক্লাস করে বাসায় ফিরছি। পথে বাসে বসে বাড়ীর কথা ভাবতে থাকি । কাল বা পরশু বাড়ী যেতে হবে। সময়টা যেন কিছুতেই পার হতে চায় না। বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়া , খেলাধূলা করা ঘুরে বেড়ানো , হই হুল্লুর করা এসব নিয়ে সারাক্ষণ ব্যস্ত থাকার জন্যই বাড়ীতে চলে আসতে মন আনচান করতো। মনের মধ্যে উদয় হলো কাল বা পরশু ই যদি বাড়ী যেতে হয় তাহলে আজকে গেলে দোষ কি?
সূর্য তখন পশ্চিম আকাশে হেলে পড়ছে । শ্রাবণ মাস হলে ও আকাশ যথেষ্ট পরিষ্কার । তখন শেরপুর থেকে সর্বশেষ লঞ্চ চার টারদিকে ছেড়ে যেত। হাতে এখনো প্রায় দু ঘণ্টার মতো সময় আছে। তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলাম। যেই কথা সেই কাজ । বাসায় ঢুকেই কয়েকটা বই আর দরকারি কাপড় ব্যাগে ভরেই গাড়ী ধরার উদ্দেশ্যে ঘর থেকে বের হয়ে গেলাম। সিলেট থেকে হবিগঞ্জগামী বাস ধরতে পারলে যথা সময়ে শেরপুর লঞ্চঘাটে পৌঁছতে পারব ।
গাড়ীতে উঠে ক্লান্ত দেহ শ্রান্ত মন নিয়ে জানালার পাশে একটা সিটে বসলাম। প্রচন্ড যান জটে গাড়ী আটকা পড়লো। একবার ভাবছি আজ বাড়ী না গেলেই ভাল । কারণ শেরপুর গিয়ে সর্বশেষ লঞ্চ টা আর ধরা সম্ভব হবে না। ঘড়িতে সাড়ে তিনটার মতো বাজে। যান জট যে কখন ছাড়বে তা এই মুহূর্তে বলা খুই কঠিন । এরই মাঝে গায়ে বেশ ক্লান্তি ঝেঁকে বসেছে। হঠাৎ চোখের পাতা কেমন যেন বন্ধ হয়ে আসতেছে। এদিকে ওদিকে ডুলে পরছি । গাড়ী তখনো ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। এক সময় প্রচন্ড ঘুম যেন দুই চোখের পাতা চেপে ধরলো। পাশের টিং টিং এ চেহারার মানুষ টা কেমন যেন আস্তে আস্তে আমার বুক পকেটের কাছাকাছি হাতটা নিয়ে এসে যখন আঙ্গুল গুলো পকেটের ভিতরে ঢুকাবে গাড়ীর ঝাকুনীতে চোখ খোলে গেল । লোক টা ও কেমন অপ্রস্তুত হয়ে হাত টা সরিয়ে নিয়ে একেবারে সিট ছেড়ে গাড়ী থেকে নেমে গেল , আমি কথা বলার ও সময় পাইনি। বুঝলাম যাত্রী বেশে পকেট মারের কবলে পড়ে যাচ্ছিলাম। গাড়ী সিলেট রেল ওয়ে স্টেশন যখন অতিক্রম করলো তখন ঘড়ির কাটা ঠিক চার টার ঘর অতিক্রম করলো। লঞ্চ পাওয়ার আশা মন থেকে একেবারে ঝেড়ে ফেলে দিয়ে বিকল্পের সন্ধান করতে লাগলাম মনে মনে। ফিরে যাওয়ার কথা মনে উঠলেই অসময়ে বাড়ীতে যাওয়ার অভিজ্ঞতা সংগ্রহ ও এডভ্যাঞ্চার মনের মধ্যে প্রচন্ড রকমের চাপ সৃষ্টি করতে থাকলো। মনে হলো , দেখিই না কি হয় । কেমন করে বাঁধা অতিক্রম করে বাড়ী পৌঁছা যায় দেখাই যাক না।
দিনের শেষবেলা বাড়ীর দিকে রওয়ানা দিতে মায়ের প্রবল নিষেধ ছিল। বাড়ীতে যদি আসতেই হয় সকালে রওয়ানা হওয়ার কড়া নির্দেশ ছিল। কখনো বিকালে যেন রওয়ানা না দেই সে বিষয়ে প্রতিনিয়ত নিষেধ থাকত। রাতে গেলে মায়ের বকুনি নিঃশব্দে হজম করতে হত।
শেরপুর পৌঁছলাম পাঁচটার অনেক পড়ে। সঙ্গত কারণেই কুশিয়ারার দক্ষিণ পাড়ে নেমে ছোট বাসে উঠে ইনাতগঞ্জ এর দিকে রওয়ানা হলাম। রাত হলে ও পথে আত্মীয়স্বজন রয়েছেন তাদের বাড়ীতে উঠা গেলেও মনের মধ্যে কঠিন সিদ্ধান্ত দানাবেঁধে বসে আছে বাড়ী আজ যেতেই হবে রাত বার টা হলে ও। অথচ বাড়ীতে রাতের মধ্যে পৌছঁতে না পারলে ও এমন কোন ক্ষতি হওয়ার ও সম্ভাবনা নেই । তারপর আজ মন যে সিদ্ধান্ত নিল তা থেকে সরিয়ে নিয়ে আসার ক্ষমতা বোধ হয় বিধাতা কাউকে দেননি। লক্ষ্যে আমি অনড়।
ইনাতগঞ্জ পৌঁছার পর ও পশ্চিম আকাশে সূর্য তখনো উঁকি মারছে। গাছের পাতার ফাঁকে ফাঁকে পড়ন্ত বিকেলের মরা রোদের ঝলক চোখ টা খুব বেশী ধাঁধিঁয়ে তোলতে পারেনি। নিরাশার দোলাচলে ও মনটা মাঝে মাঝে শেষ বিকেলের বিদায় নেওয়া মরা রোদের সাথে কণ্ঠমিলিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ে। পড়ক্ষণেই মনের ভিতর এডভ্যাঞ্চারের স্রোত বইতে থাকে। ফার্মবাজার এর উদ্দেশ্যে এবারের গাড়ীতে যাত্রা শুরু করলাম। সন্ধ্যা শুরু হয়ে গেল। চারপাশের প্রকৃতি পান্ডুরবর্ণ ধারণ করতে লাগলো। কোথায় যেন একটা বিষাদ এসে সমস্ত প্রকৃতিকে গ্রাস করে ফেলছে। পাখি গুলো উড়া উড়ি করে আপন নীড়ে ফিরে যাওয়ায় ব্যস্ত হয়ে পড়ছে। লোকাল গাড়ী পথে পথে যাত্রী উঠা নামা করে আস্তে আস্তে এগিয়ে চললো। নবীগঞ্জ টু মার্কুলী রাস্তা তখনো একেবারে কাঁচা। রামপুর গ্রামের ফার্মবাজার পর্যন্ত ইটসয়েলিং রাস্তা। তারপর কাঁচা রাস্তা।
রামপুর এর রাস্তার পাশে একটা বিশাল পুকুর আছে। তখনো দোকান পাটের কোন চিহ্নই দেখা যায়নি। পুকুরের পাড়ে লোকজন হাঁসের একটা খামার করলো। খামারের হাঁস গুলো পুকুরের পানিতে মনের আনন্দে সাঁতার কাটতো। কিছুদিন পর পুকুর পাড়ে একটা দোকান ঘর দেখা গেল। পর্যায়ক্রমে রাস্তার উন্নয়ন কাজ এগিয়ে চলার সাথে সাথে দোকানের সংখ্যা ও বৃদ্ধি পেল। তখন অনেক টা বাজারের মত দেখতে মনে হলে নাম দেওয়াটা অপরিহার্য হয়ে উঠে। স্থানীয় লোকজন একে ফার্মবাজার নাম দিয়ে ডাকা শুরু করলে তখন থেকে ফার্ম বাজার নাম প্রচল হয়ে গেল।
ফার্ম বাজার নামতেই লোকজন যখন আমার গ্রামের নাম জানলো তখন তো এই অন্ধকার রাতে কেমন করে পৌঁছবো তা নিয়ে আমার চেয়ে তাদেরকেই বেশী চিন্তিত মনে হলো। কিঞ্চিৎ কাদা মাখা রাস্তা চলতে গিয়ে চামড়ার স্যান্ডেল হাতে নিয়ে আস্তে আস্তে পথ অতিক্রম করতে থাকি। প্রায় আধা ঘন্টা হাঁটার পর সড়ক থেকে ডান দিকে নেমে রামপুর গ্রামের একেবারে পশ্চিম দিকে বিবিয়ানা নদীর পাড়ে এসে দাঁড়ালাম। সাথে আরো দু তিন জন মানুষ আছে। খেয়া পার হয়ে তারা ও বাড়ীতে যাবে। ওপার থেকে খেয়া নৌকা আসতেই তাড়াতাড়ি নৌকায় উঠে বসলাম। পাঁচ থেকে সাত মিনিটের মধ্যে নদী পার হয়ে নৌকা থেকে যখন পারে উঠলাম দেখি আমার চামড়ার স্যান্ডেল নদীর অপর পারেই রয়ে গেছে। কি আর করা আবার নৌকায় উঠে স্যান্ডেল নিয়ে আবার ফিরে এলাম।
এবার পাড়ে নামতেই আমার যাত্রাপথে আরেকজন ভদ্রলোক কে পেয়ে গেলাম। অন্ধকার রাস্তায় গল্প করতে করতে পথ চলছি। একসময় মেঘারকান্দি গ্রামের মেলা বসার জায়গায় গিয়ে হাজির হলাম। পেন্ট ফল্ডিং করে উপরের দিকে উঠিয়ে জলে নেমে গেলাম। এক সময় কাপড় আধা ভিজে গিয়ে পাড়ায় উঠলাম। ও গাঁয়ে বাবার এক বন্ধু আছেন যাকে আমি খুব ভাল করে চিনি আমাকে ও তিনি চিনেন। উনার বাড়ীতে গিয়ে উপস্থিত হলাম। উদ্দেশ্য গোপালগঞ্জ বাজার থেকে হরিনাকান্দি হয়ে ভাইটগাঁও অতিক্রম করে শুকনায় পায়ে হাঁটার রাস্তা দিয়েই শ্রাবণ মাসের কর্দমাক্ত পথে বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওনা হব। বাবার বন্ধু প্রমথেশ দাশ তালুকদার অত্যন্ত স্বজ্জন ব্যক্তি। এলাকার মানুষ এক নামে চিনে। আমাকে রাতে থাকার জন্য প্রচন্ড রকমের অনুরোধ করলেন। আমি তখনো আমার সিদ্ধান্তে অটল। আমার যাত্রার পরিকল্পনা দেখে তিনি ও আমার সহযাত্রীর মত আমার যাত্রা পথ পরিবর্তন করতে বললেন।
তাহলে উপায়? আবার বিবিয়ানা নদী পার হয়ে হলিমপুর এর রাস্তা দিয়ে সোনাপুর যেতে হবে। বাবার বন্ধু তাঁর পাশের বাড়ীর লোক কে দিয়ে নদী পাড় করে দিলেন। আমরা ও কখনো জল কখনো স্থল ও কর্দমাক্ত পথ অতিক্রম করতে লাগলাম। সোনাপুর যাওয়ার পর আমার সহযাত্রীকে ও হারালাম।
এবার আমি সম্পূর্ণ একা। আশে পাশের বাড়ী ঘরে টিম টিম করে কুপি বাতি জ্বলছে। আবার কোন কোন বাড়ীতে জনমানবের ও খুব একটা সাড়া পাওয়া যাচ্ছিল না । দিনে অনেক পরিচিত জায়গা হলে ও বর্ষার রাতে সোনাপুর গ্রামের রাস্তা প্রায় অচেনা লাগছে। গ্রামের পূর্ব দিকে খোলা আকাশের নীচে সপ্তাহে দু দিন হাট বসতো । রাতের আঁধারে বাজারের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া খুবই কঠিন।
এবার পরিচিত একজনের বাড়ীতে গিয়ে ডাক দিতেই তিনি দরজা খোলে একেবারে আকাশ থেকে পড়লেন।
“এত রাতে কোথায় থেকে আসছো?”
আমি ক্লান্ত দেহে ক্ষীন গলায় শুধু বললাম
আমি বাড়ী যাব। আমাকে মেহেরবানী করে নদী পাড় করে দেওয়ার ব্যবস্থা করে দিন।
তিনি রাতে থেকে যাওয়ার জন্য প্রচন্ড রকমের চাপ দিলে ও মনটা একেবারেই অনড়। অগত্যা উনি উনার ছেলেকে দিয়ে পানিতে ডুবন্ত নৌকা সেঁচে বাওয়ার উপযোগী করে আমাকে আবার ও বিবিয়ানা নদী পার করে দিয়ে হাতে একটা টর্চ লাইট ধরিয়ে দিলেন। পরে এক সময় লাইটা ফেরত নিয়ে আসবেন।
নৌকা থেকে নেমেই পা টিপে টিপে হাঁটতে থাকলাম। মাঝে মধ্যে সড়কের ঢালুতে ও লাইট মারতে শুরু করলাম। কিছুক্ষণ এগিয়ে যাওয়ার পর যখন সড়কের ঢালুতে লাইট মারলাম আমার চোখ তো একেবারে আটকে গেল। অনেক বড় কুচ কুচে কাল সাপ। স্থানীয় ভাষায় এটা কে আলোদ সাপ বলা হয়ে থাকে। প্রচন্ড বিষাক্ত সাপ। মূলত কাল কেউটে।
টর্চ এর আলো নিয়ে আস্তে আস্তে সাপের কাছাকাছি যেতে থাকলাম। সাপুড়ের কাছে কালো কেউটে দেখেছি তবে জীবন্ত ও এতো ফ্রেশ কেউটে দেখার সুযোগ আর কোন দিন পাব কি না সেটা নিশ্চিত নয়। তাই আজকে চোখের সামনে প্রাকৃতিক কেউটে দেখার সুযোগ ছাড়তে আমি নারাজ। অনেক ক্ষণ যাবত টর্চ এর আলোতে কেউটে কে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখতে লাগলাম। কাল কুচ কুচে লম্বা গোলগাল দেহ দুর্বা ঘাসের মাঝে বিছিয়ে রেখেছে। টর্চের আলো পড়ে গা খানি কেমন চিক চিক করে উঠছে। একটু পর কেমন যেন ঘুম ভেঙ্গেছে বলে মনে হলো। আস্তে আস্তে বিশ্রাম স্থান ত্যাগ করা শুরু করতে লাগলো। আমি ও যতক্ষণ সাপের শরীর দেখা যায় টর্চ ততক্ষণ জ্বেলে সাপের শরীর বরাবর ধরে রাখলাম। এক সময় কেউটে টি দৃষ্টির আড়ালে চলে গেল। আমি সামনের দিকে পা বাড়াতে থাকলাম।
দশ মিনিট হাঁটলেই আমার আবেগ জড়ানো গ্রাম।
এবার পানি ভর্তি মাঠ পাড়ি দিতে হবে। পাশের বাড়ীর সবাই ঘুমে অচেতন হয়ে পড়ে আছে। বেশ কয়েকটা ডাক দিতেই একজন দরজা খোলে বের হয়ে এসেই যখন দেখলেন আমি ব্যাগ কাঁধে জুতা হাতে করে দাঁড়িয়ে আছি তিনি তো অবাক হয়ে পড়লেন। এত রাতে কোথায় থেকে !
যদিও আমি কোথায় থেকে আসতে পারি তা উনার অজানা নয়। ছোট কোষা দিয়ে বিশাল মাঠ পাড় করে দিলেন। বাড়িতে এসে দেখি সব কটা ঘরের দরজা বন্ধ। মাঝে মধ্যে ঘুমন্ত মানুষের নাক ডাকার আওয়াজ ভেসে আসছে। কাঁপা কাঁপা হাতে দরজায় ঠুকা দিয়ে মা কে দু তিন টা ডাক দিতেই মা দরজা খোলে দিলেন। এতো রাতে আসার জন্য তিরস্কার করতে লাগলেন। আমার যাত্রা পথের বিবরণ তো তখনো বলিনি। তবে বুঝতে বাকি নেই যে উনার ছেলে আজ বিশাল এডভ্যাঞ্চার করে বাড়ী ফিরেছে। একটু পর বাবা ও জেগে উঠলেন। রাতে আসা নিয়ে তার ও একই কথা।
আজ প্রায় ছাব্বিশ বছর । রাস্তা ঘাট যাতায়াত ব্যবস্থা আগের থেকে কত পার্থক্য কত উন্নত । এখন সপ্তাহে সাত দিন চব্বিশ ঘন্টা যে কোন জায়গায় যাওয়া কোন ব্যাপার ই না । আজকের দিনে এসে সেই দিন গুলো শুধুই স্মৃতি পটে দোলা দিয়ে যায়। রবী ঠাকুরের কথায় যদি বলি “ দিন গুলি মোর সোনার খাঁচায় রইলো না সে যে আমার নানা রঙের দিন গুলি ”।
শিক্ষার আলোর ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।
———————————————————————————–
মোহাম্মদ জাহির মিয়া তালুকদার
ইন্সট্রাক্টর
উপজেলা রিসোর্স সেন্টার, বানিয়াচং, হবিগঞ্জ।
Posted ৮:১৯ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০২ আগস্ট ২০২১
শিক্ষার আলো ডট কম | শিক্ষার আলো
আর্কাইভ
শনি | রবি | সোম | মঙ্গল | বুধ | বৃহ | শুক্র |
---|---|---|---|---|---|---|
১ | ২ | ৩ | ৪ | ৫ | ৭ | |
৮ | ৯ | ১০ | ১১ | ১ | ১৩ | ৪ |
১৫ | ১৬ | ১ | ৮ | ১৯ | ২০ | ২১ |
২২ | ২৩ | ২৪ | ২৫ | ২৬ | ২৭ | ২ |
৯ | ৩০ | ৩১ |