শনিবার ২৭শে জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ১২ই শ্রাবণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্বার্থহীন ভালোবাসার নাম মা

কঠোর মায়েদের সন্তানের ভবিষ্যত উজ্জ্বল হয়.?

এম.এ মারুফ সোহেল   |   সোমবার, ০৬ মে ২০২৪ | প্রিন্ট

কঠোর মায়েদের সন্তানের ভবিষ্যত উজ্জ্বল হয়.?

বাংলায় একটা কথা প্রচলন আছে,“ মায়ে ১০টা সন্তান মানুষ করতে পারে কিন্তু বাবার পক্ষে ১টা লালন-পালন করা কষ্টকর”। কথাটা স্থান কাল পাত্রভেদে শতভাগ সঠিক না হলেও, একেবারে অস্বীকার করার কোন উপায় নেই।কেননা পুরুষতান্ত্রিক সমাজে পরিবারের সকল চাহিদা পূরণ করতে গিয়ে একজন পিতাকে বা পরিবারের কর্তা ব্যক্তিকে ঘরে-বাইরে কাজ করতে হয়; সেজন্য হয়তো একজন পিতার পক্ষে অনেকটা সময় সন্তানকে দেবারক্ষেত্রে অসহায় হয়ে পড়ে। আর সেই ঘাটতিটা কেবলমাত্র মার পক্ষেই পূরণ করা সম্ভব হয়; যদিও মাকে এক্ষেত্রে একটু বেশি পরিশ্রম করতে হয় কিন্তু তাতে সন্তান উপযুক্তভাবে গড়ে উঠতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

আর এই ভূমিকা পালন করতে গিয়ে মাতৃস্নেহে সন্তানকে মানুষ করতে গিয়ে কিছু ক্ষেত্রে কঠোরও হতে হয়। এখন প্রশ্ন হলো বেড়ে ওঠার বয়সে আপনার বাবা-মা কী খুব কঠোর ছিলেন? তাঁরা কি আপনাকে ঘর পরিষ্কার করতে, বাড়ির কাজ করতে এবং প্রতিনিয়ত ভবিষ্যত নিয়ে ভাবতে বলতেন? আমাদের মধ্যে বেশিরভাগ সন্তানেরাই এমন পরিবারে বড় হয়েছি যেখানে মায়েরা ছিলেন আমাদের পরম বন্ধু আবার কখনো কখনো চির শত্রু!


কিন্তু কেনো ? হয়তো নিত্যদিন পেছনে লেগে থাকা এবং বলে বলে কাজ করানোর জন্য হয়তো আপনার জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিলো। কিন্তু আপনি কী জানেন? গবেষকদের মতে, কঠোর মায়েদের সন্তানেরাই ভবিষ্যতে সফলতার মুকুট পরিধান করতে সমর্থ হয়? সাময়িক সময় সন্তানের চোখে মায়ের শাসন-বারণ নিষ্ঠুরতার মনে হলেও মায়ের সে শাসনের পিছনে ছিলো সন্তানের ভবিষৎ গড়ার দৃঢ় প্রত্যয় ও পরমস্নেহভরা শাসনের বেড়াজালে সন্তানের জন্য বিধাতার নিকট পৃথিবীর সর্বোচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন দোয়া। সুতরাং, তখন অসহ্য মনে হলেও ভবিষ্যতে আপনি আপনার মা’কে বারংবার ধন্যবাদ জ্ঞাপন করবেন। এটিই সত্য!

যে সকল বাচ্চার মায়েদের উচ্চস্বপ্ন ছিলো তারা বর্তমানে অধিক আত্মবিশ্বাসী এবং নিরাপদ। বিভিন্ন গবেষকদের গবেষণায় এটিও প্রমাণিত হয়, যে সকল মেয়েদের মায়েরা অতিরিক্ত কঠোর ছিলেন তাদের মধ্যে অল্প বয়সে মা হবার প্রবণতা শতকরা অনেকটা কম।


শক্ত ও রাগী মায়েদের সন্তানেরা দ্রুত পড়াশোনা শেষ করতে পেরেছে এবং ভালো চাকরিও পেয়েছে। এটা শুনতে অবিশ্বাস্য ও হাস্যকর মনে হতে পারে কিন্তু ঘটনা সত্য!

অনেক বাচ্চারাই তাদের মায়েদেরকে সাত যম মনে করে থাকে। কিন্তু আমি নিশ্চয়তা সহকারে বলছি যে, মায়ের এ শাসন আপনার পরবর্তী জীবনে সাফল্য বয়ে আনতে বেশ সাহায্য করবে আপনাকে। বয়স্ক হবার পর আপনি মা’কে বারবার ধন্যবাদ জানাবেন সুন্দর ও অভাবনীয় একটি জীবনের জন্যে। শুধু তাই নয়, সে শিক্ষায় আপনি আপনার সন্তানকেও শিক্ষিত করতে চাইবেন। তবে একই সাথে বলতে চাই অবশ্যই আপনি আপনার সন্তানকে উপযুক্ত/প্রাপ্য ভালোবাসাটুকুও দিবেন , কেননা অতিরিক্ত শাসন অনেক সময় বিপদগামীও করতে পারে । সেজন্য শাসনের পাশাপাশি তার সাথে বন্ধুর মতোও মিশতে হবে। তাকে বোঝাতে হবে মা হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় নিয়ামক ও বন্ধু।


অতীতের কিংবা শৈশবের কথা একটু মনে করুন তো? আপনার মা কেমন ব্যবহার করতেন আপনার সঙ্গে? আপনাকে কি শুধু শাসন করেছে ? আপনি না খেয়ে থাকলে কে প্রথম খোজ নিয়েছে ? কে আপনার অসুস্থতায় সারারাত জেগে আপনার পাশে বসে রাত কাটিয়েছে ? তাই সেই মায়ের কঠোরতা সেই সময় আপনার কাছে তিক্ততার সৃষ্টি হলে, বাস্তবিক আপনার কল্যাণ সাধন হয়েছে।

পাশাপাশি, সন্তানকে শুধু শাসন কিংবা  স্নেহ নয়.! কেননা মা হিসাবে যখন আপনি কোন একটা বিষয় বেশি বেশি সন্তানের উপর প্রয়োগ বরতে যাবেন; তখন সন্তানে জীবন গঠনে প্রকৃত উপকার নাও আসতে পারে। তাই সন্তানের প্রতি আপনার স্নেহ-মমতা ও ভালোবাসা থাকবে কিন্তু প্রয়োজনীয় শাসন ও কঠোর হতেও পিছপা হবেন না। যখন আপনার সন্তান একজন প্রতিষ্ঠিত মানুষ হিসাবে নিজেকে অধিষ্ঠিত করতে সক্ষম হবে তখনই আপনি স্বার্থক।আমাদের মায়েরা অনেক সময় অভিযোগ করে থাকেন, সন্তান ভালো কিছু করলে বাবা বলেন,“ দেখতে হবে না এটা আমার সন্তান”।

কিন্তু ঐ সন্তান যখন রেজাল্ট খারাপ করে কিংবা ভুল পথে পা বাড়ায় তখন ঐ বাবা কিন্তু মাকে দোষারোপ করে বলেন,” তোমার কারণে সন্তান আজ এমন হলো”। আসলে একজন সন্তানের ভবিষ্যত গঠনে মা-বাবা কারো ভূমিকা কম নয়, তবে এক্ষেত্রে মা অসামান্য অবদান রাখতে পারেন। আমি মনে করি মা হোক সন্তানের পরম বন্ধু ও শিক্ষক।

লেখক: এম. এ মারুফ সোহেল, শিক্ষক ও কলামিষ্ট, যশোর।

……………………………………………

আপনি কি শিক্ষক? লেখক ? কিংবা গবেষক ?

আপনি কি আপনার লেখা প্রকাশ করতে চাচ্ছেন? বিস্তারিত পড়তে ক্লিক করুন এখানে।

তাহলে আর দেরি না করে আজই আমাদেরকে লিখে পাঠান, লিখতে পারেন নিয়মিতও। আমরা প্রকাশ করবো আপনার লেখা।

শিক্ষার আলো ডট কমের ফেসবুক পেজে লাইক দিতে ক্লিক করুন। সকল সংবাদের সাথে থাকুন: https://web.facebook.com/shiksharalo.official

শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে শিক্ষার আলোর ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। লাইভ অনুষ্ঠান (টকশো, গান ও কবিতার আসর), আইটি ট্রেনিং ও অনলাইন ক্লাসের ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই শিক্ষার আলো ডট কমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।

শিক্ষার আলো ডট কমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।

Facebook Comments Box

Posted ২:৩৮ অপরাহ্ণ | সোমবার, ০৬ মে ২০২৪

শিক্ষার আলো ডট কম |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বু বৃহ শুক্র
 
১০১১
১৩১৫১৬১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭৩০৩১  
অফিস

১১৯/২, চৌগাছা, যশোর-৭৪১০

হেল্প লাইনঃ 01644-037791

E-mail: shiksharalo.news@gmail.com