অলোকা রাণী সরকার | শনিবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ | প্রিন্ট
বর্তমানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। স্কুল ভীতি দূর হয়েছে শিশুরা আনন্দঘন পরিবেশ শিক্ষা অর্জন করতে পারছে। একসময় ছিল যখন বিদ্যালয়ে যেতে শিশুরা ভয় পেত, প্রতিদিনের পাঠ মুখস্থ না করে বিদ্যালয়ে গেলে শিশুদের বেতের বাড়ি খেতে হতো, তাছাড়া নিরস পাঠদান শিশুদের পক্ষে বোধগম্য ছিল না।যার ফলে শিশুদের মনে স্কুল ভীতি সৃষ্টি হতো।স্কুল পালানো, শিক্ষক মশাইদের পিটুনি আর নিরানন্দ পাঠদানে কোমলমতি শিশুরা বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়তো।অনেক আগের পাঠশালার পড়া আর পন্ডিত মহাশয়দের শাসনের কথা শুনলে তো অবাক হয়ে যায় কত কঠোরতা অবলম্বন করা হতো বিদ্যাঅর্জনের জন্য। এত কঠোরতা কোমল হৃদয়ে সইবে কেমনে তাইতো সকলের পক্ষে লেখাপড়া শেখা সম্ভব হয়নি।
বর্তমানে কিন্ডারগার্টেন স্কুল গুলোতে লক্ষ্য করা যায় অতিরিক্ত বইয়ের চাপ এবং ইংরেজি শব্দ গুলো ছোট ছোট বাচ্চাদের বোঝার বয়স না হওয়ার দরুন তোতা পাখির মত মুখস্থ করাতে বাধ্য হয় অভিভাবকেরা। যার ফলে শিশুরা মুখস্ত বিদ্যা কিছুদিন পরে ভুলে যায়। আর এত জটিল ইংরেজি শব্দ আয়ত্ব করাতে অভিভাবকের মন আনন্দে ভরে যায়।তারা ভাবে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বাংলা বর্ণ, সংখ্যা,ছড়া ছাড়া কিছুই শেখেনি সেখানে তার কিন্ডারগার্টেনে পড়া ছোট্ট শিশু কত ইংরেজি শব্দ শিখেছে।তারা এতেই খুশি হয়ে যায়। কিন্তু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুরা তাদের বয়স ও সামর্থ্য অনুযায়ী ধীরে ধীরে প্রাক- প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত নির্ধারিত বিষয়ের যতটুকু প্রান্তিক যোগ্যতা অর্জন করতে হবে তা সক্ষম হয়। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা সবার জন্য শিক্ষা দেয়,সব ধরনের শিশুরা এখানে পড়ালেখার সুযোগ পায়,লেখাপড়ার পাশাপাশি সহশিক্ষাক্রমিক কার্যক্রম শিশুদের আনন্দ দেয়।
পাঠকে আনন্দ দেয়ার জন্য পাঠসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন উপকরণ ব্যবহারের মাধ্যমে শিশুদের পাঠের বিষয়বস্তু সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা দেওয়া হয়। একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষককে সব বিষয়ে জানতে হয়,ছোট ছোট শিশুদের মনোভাব ও বুঝতে হয়। বর্তমানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকের পাশাপাশি শিক্ষিকার সংখ্যা বেশি পরিলক্ষিত হয়। শিক্ষিকা মহোদয় তার সন্তানদের মতই মাতৃস্নেহে শিশুদের শিক্ষা দিয়ে থাকেন।আদর ও করেন প্রয়োজনে শাসন ও করেন। প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন, স্কুলের মাঠ,শিশুদের বিনোদনের জন্য বিভিন্ন খেলনার ব্যবস্থা করেছে বর্তমান সরকার। বিদ্যালয়ের প্রতি শিশুদের আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিদ্যালয়ের ভিতরের ও বাহিরের প্রাঙ্গন সুন্দরভাবে সাজানো যা শিশুদের বিদ্যালয়ের প্রতি আকৃষ্ট করবে।
নতুন শিক্ষাক্রমে শিশুদের পরীক্ষা ভীতি দূর করতে ধারাবাহিক মূল্যায়নের ব্যবস্থা রয়েছে। আর শতভাগ উপবৃত্তি তো আছেই। শুধু শিক্ষক নয় সেই সাথে অভিভাবকদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দিনে দিনে সফলতার শিখরে পদার্পণ করবে। আসুন আমাদের সন্তানদের আমাদের বাড়ির কাছেই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করি।আমাদের শিশুরাই ভবিষ্যতের সম্পদ।
অলোকা রাণী সরকার
সহকারী শিক্ষক
নওদাগ্রাম কাশিপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
কোটচাঁদপুর, ঝিনাইদহ।
[বি.দ্র: মতামতটি একান্তই লেখকের, যা হুবুহু প্রকাশিত হলো। এই লেখার সাথে পত্রিকা কর্তৃপক্ষের কোন সম্পর্ক নেই]
লেখা পাঠান আমাদের নিকট : shiksharalo.news@gmail.com
লিখুন শিক্ষা বিষয়ক সংবাদ, ফিচার, কলাম, মতামত। পাঠিয়ে দিন উপরোক্ত পত্রিকার মেইলে। লেখার শেষে মোবাইল নম্বর ও ছবি পাঠাতে ভুলবেন না , ধন্যবাদ…………………………….
ফলো করুন আমাদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ : শিক্ষার আলো ডট কম
ভিজিট করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল : Shikshar Alo
Posted ৭:৪৭ অপরাহ্ণ | শনিবার, ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩
শিক্ষার আলো ডট কম | শিক্ষার আলো