রেহানা পারভীন | শুক্রবার, ২৫ জুন ২০২১ | প্রিন্ট
করোনায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা পাবজি ও ফ্রি ফায়ার গেমে চরম আসক্ত হয়ে পড়েছে। এই গেম দুটো কীভাবে বন্ধ করা যায়— এমন প্রশ্নের জবাবে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘ইন্টারনেটের জগতে কিছুই বন্ধ করা যায় না। আর বন্ধ করাও সমাধান নয়। মাথা ব্যথার জন্য মাথা কেটে ফেলা—এটা কোনো সমাধান না। আমরা ফেসবুক বন্ধ করেছিলাম, কিন্তু ভিপিএন (ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্ক) দিয়ে ফেসবুক চালিয়েছে সবাই। এখন বলুন ভিপিএন বন্ধ করবে কে?’
একদিকে অবসর অন্যদিকে অনলাইনের অবাধ ব্যবহার উঠতি বয়সী ছাত্র-ছাত্রীদের টেনে নিয়ে যাচ্ছে ফ্রি ফায়ার বা পাবজি নামক গেমের আসক্তিতে।গেম দুইটি যুব সমাজের কাছে বেশ জনপ্রিয় হয়ে ওঠায় ধীরে ধীরে তাদের ভয়ঙ্কর ভবিষ্যতের মুখে ঠেলে দিচ্ছে। ব্যয়বহুল এই গেমস দুইটি হয়ে উঠেছে বই বিমুখ ছাত্রদের অবসর বিনোদনের কেন্দ্রবিন্দু।
অনেক অভিভাবকের অভিযোগ, ফ্রি ফায়ার গেমে আসক্তদের খাওয়া-ঘুম তো নেই-ই বরং তাদের সময় নেই কারোর সঙ্গে গল্প বা কথা বলার। এভাবে চললে তারা শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী হয়ে উঠতে পারে। তাছাড়া ফ্রি ফায়ারে ব্যবহৃত বিভিন্ন চরিত্র ও অস্ত্র ব্যবহৃত হয়, যা সম্পর্কে অনেক পেশাদার সন্ত্রাসীরাও ওয়াকিবহাল নয়।
এই খেলার এক একটা চরিত্র কিনতে অন্তত ৪০০-৫০০ টাকা খরচ করতে হয় তাদের। এই অর্থ তারা কোথা থেকে সংগ্রহ করে তা নিয়েও আতঙ্কিত অনেক অভিভাবক। ছোট বাচ্চারা বাবা-মার কাছে জেদ ধরে টাকা আদায় করে। না দিলে আত্মহত্যার ঘটনা পর্যন্ত ঘটতে পারে। মায়ের সঙ্গে অনেকের বাগবিতণ্ডার জেরে মারামারির মতো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে।
‘ইন্টারনেট ব্যবহার করেই তো এসব খেলতে হয়। আর ইন্টারনেট ডাটার যে দাম কি করে পেরে উঠবে অভিভাবকরা? তাছাড়া এই খেলার খেলোয়াড়রা যেভাবে কথা বলে তা দেখলে মনে হবে পাগল। সারাদিন বকাবকি করে। সারাদিনের এই বকাবকি তাদের ঘুমের ঘোরেও প্রভাব ফেলে। দিনে ব্যবহৃত বিভিন্ন রকমের শব্দ ঘুমের ঘোরেও বলতে শোনা যায়। ’
অনেক অভিভাবকই বলেন, ‘মূলত এই খেলার সুযোগ এসেছে অনলাইন ক্লাস শুরুর পর থেকে।কিন্তু আমরা শিক্ষকরা এতো কষ্ট করে ক্লাস নিয়েও এসব কথা শুনতে হয় প্রতিনিয়তই।তাদের মতে ক্লাসগুলো যদি অনলাইনে না দিয়ে কোনো টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে সর্বশেষ পর্যন্ত চালিয়ে যেতো, তবে আমার মনে হয় ভালোই হতো। এতে ওদের হাতে স্মার্ট ফোন যেতো না।
অনেক শিক্ষক বলেন, ‘অনেক ছেলে-মেয়েরা অনলাইন ক্লাসের নাম করে নতুন মোবাইল কিনেছে। কিন্তু ক্লাসে অনেকের বিন্দুমাত্র মনোযোগ নেই। ’
কয়েকদিন হতে জানতে পারছি, শিক্ষা ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুপারিশের ভিত্তিতে বাংলাদেশে ফ্রি ফায়ার ও পাবজি বন্ধের উদ্যোগ নিচ্ছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। আলোচনায় ওই দুই গেমের আসক্তি নিয়ে উদ্বেগ জানানো হয়। এ বিষয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ফ্রি ফায়ার ও পাবজি গেম দুটি বন্ধে দুই থেকে আহ্বান জানানো হয়েছে। এটি সত্য যে ওই দুটি গেম কিশোর-কিশোরী ও তরুণদের মধ্যে আসক্তি তৈরি করেছে।
আমাদের আগামী ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য আমরা এটা নিয়ে ভাবতেই পারি।কারণ বাঙালি বীরের জাতি, মাথা উঁচু করেই থাকবে। মাথা নিচু করে থাকার জন্য আমাদের জন্ম হয়নি।আমাদের সন্তানদের মাথা উঁচু করে বাঁচার জন্য এই গেম বন্ধ হলে আমরা যেমন উপকৃত হতাম তেমনি বেঁচে যেতো আমাদের আগামী প্রজন্ম।।
লেখক: রেহানা পারভীন, সহকারী শিক্ষক, জামতলা দাখিল মাদ্রাসা, গোয়ালন্দ, রাজবাড়ী।
……………………………………………
আপনি কি শিক্ষক? লেখক ? কিংবা গবেষক ?
আপনি কি আপনার লেখা প্রকাশ করতে চাচ্ছেন? বিস্তারিত পড়তে ক্লিক করুন এখানে।
তাহলে আর দেরি না করে আজই আমাদেরকে লিখে পাঠান, লিখতে পারেন নিয়মিতও। আমরা প্রকাশ করবো আপনার লেখা।
শিক্ষার আলো ডট কমের ফেসবুক পেজে লাইক দিতে ক্লিক করুন। সকল সংবাদের সাথে থাকুন: https://web.facebook.com/shiksharalo.official
শিক্ষার সব খবর সবার আগে জানতে শিক্ষার আলোর ইউটিউব চ্যানেলের সাথেই থাকুন। লাইভ অনুষ্ঠান (টকশো, গান ও কবিতার আসর), আইটি ট্রেনিং ও অনলাইন ক্লাসের ভিডিওগুলো মিস করতে না চাইলে এখনই শিক্ষার আলো ডট কমের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন এবং বেল বাটন ক্লিক করুন। বেল বাটন ক্লিক করার ফলে আপনার স্মার্ট ফোন বা কম্পিউটারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিওগুলোর নোটিফিকেশন পৌঁছে যাবে।
শিক্ষার আলো ডট কমের ইউটিউব চ্যানেল SUBSCRIBE করতে ক্লিক করুন।
Posted ৪:২২ অপরাহ্ণ | শুক্রবার, ২৫ জুন ২০২১
শিক্ষার আলো ডট কম | শিক্ষার আলো