বৃহস্পতিবার ২১শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

স্কুলে ভর্তি না নেওয়া মেয়েটি পেল জিপিএ-৫

নিজস্ব প্রতিবেদক   |   শনিবার, ২৯ জুলাই ২০২৩ | প্রিন্ট

স্কুলে ভর্তি না নেওয়া মেয়েটি পেল জিপিএ-৫

হুইলচেয়ারকে সঙ্গী করে চলা ইয়ামিনা বিনতে

-সংগৃহীত

হুইলচেয়ারকে সঙ্গী করে চলা ইয়ামিনা বিনতে এবার রাজধানীর উত্তরায় অবস্থিত মাইলস্টোন কলেজের থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন। প্রথম শ্রেণিতে পড়ার সময় বাসার তিনতলা সিঁড়ি থেকে পড়ে চিরদিনের জন্য চলনশক্তি হারিয়ে ফেলেন ইয়ামিনা বিনতে মাহমুদ। এরপর থেকে তার মা-বাবা ও হুইল চেয়ারের ওপর নির্ভর করে দেখতে হয় দুনিয়া।

অনেক কষ্ট ও সংগ্রাম করে মা জান্নাতুল ফেরদৌস ও বাবা মাহমুদ হাসান সেলিম তাদের নয়নের মনিকে লালনপালন করেন। সব মা-বাবারই আশা থাকে তাদের সন্তান লেখাপড়া শিখে প্রতিষ্ঠিত হবে। তাদের মেয়ে প্রাথমিকে জিপিএ ৫ পেয়ে যখন স্কুলে ভর্তি করতে চেয়েছিলেন, অসুস্থ দেখে কোনো প্রতিষ্ঠান তাকে ভর্তির সুযোগ দিতে চায়নি।


এরপর মেয়েটির পড়াশোনার প্রতিভা দেখে মাইলস্টোন কলেজের অধ্যক্ষ এম সি নুর রহমান তাকে বুকে টেনে নেন। হুইলচেয়ার ঠেলে স্কুলের দূরত্বকে কাছে টেনে নেওয়ার শুরুটা সেখানেই।

ঝালকাঠি সদর উপজেলার নথুল্লাবাদ ইউনিয়নের দিবাকরকাঠি গ্রামের প্রকৌশলী মাহামুদ হাসান সেলিমের একমাত্র মেয়ে তিনি। বর্তমানে তারা কর্মক্ষেত্রের সুবাদে ঢাকায় বসবাস করেন। হুইলচেয়ারে বসেই অদম্য মেধার বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে মেয়েটি।


মাইলস্টোন কলেজের অধ্যক্ষ এম সি নূর রহমান বলেন, অত্যন্ত মেধাবী ইয়ামিনা হুইলচেয়ারে করেই কলেজে যাতায়াত করেছে। তার মা বাবা-ই তাকে আনা-নেওয়া করতেন। প্রতিবন্ধী হওয়ায় মেয়েটির লেখাপড়ার প্রতি সর্বোচ্চ আন্তরিকতা দেখিয়েছি আমরা। বাড়তি কেয়ার নিয়েছি। ওর ভেতরে কোনো প্রতিবন্ধকতা দেখিনি। আমাদের বিশ্বাস ছিল সে ভালো কিছু করবে। তাকে কলেজের সবাই সহযোগিতা করছে। অবশেষে জিপিএ-৫ পাওয়ার সংগ্রামের অংশ হয়েছে ইয়ামিনা।

এসএসসির এই ফলাফলে খুশি হয়ে ইয়ামিনা বিনতে মাহমুদ বলে, লেখাপড়াই আমার সবকিছু। পড়াশোনা করতে না পারলে আমার খুব খারাপ লাগে। আমারও ইচ্ছে হয় অন্য সব সহপাঠীর মতো স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে। কিন্তু সেটা সম্ভব না জন্য খারাপ লাগে মাঝে মধ্যে। জিপিএ-৫ পাওয়ায় আমার সব কষ্ট দূর হয়ে গেছে। আমার ইচ্ছে, বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের মাধ্যমে জনগণের সেবা করা।


ইয়ামিনার মা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, আমার মেয়ে এসএসসি পাস করলেও সামনে তার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। কারণ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন কোনোদিন সে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারবেন না। এখন মেয়েকে কলেজে ভর্তি করতে হবে। কিন্তু অসুস্থ দেখে কোনো কলেজ তাকে সুযোগ দিচ্ছে না। বিষয়টি নিয়ে চিন্তায় আমার ঘুম আসে না।

তিনি আরও বলেন, ইয়ামিনা যদি ভালো কলেজে ভর্তির সুযোগ পায়, আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি আমার অসহায় মেয়েটির দিকে দৃষ্টি দেন, তাহলে সে দেশের বোঝা নয়, সম্পদ হতে পারে।সূত্র: সোনালিনিউজ

Facebook Comments Box

Posted ১:৩৪ অপরাহ্ণ | শনিবার, ২৯ জুলাই ২০২৩

শিক্ষার আলো ডট কম |

এ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

আর্কাইভ

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১৩১৫
১৬১৯২০২১২২
২৩২৪২৫২৬২৭
৩০  
অফিস

চৌগাছা, যশোর-৭৪১০

হেল্প লাইনঃ 01644-037791

E-mail: shiksharalo.news@gmail.com