নিজস্ব প্রতিবেদক | বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪ | প্রিন্ট
পুলিশের লাঠিচার্জে আহত কলেজ শিক্ষক আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক মো. মোস্তফা কামাল জানান, পুলিশ আকস্মিক সাউন্ড গ্রেনেড মেরে, জলকামানের ব্যবহার করেছে। বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচির এক পর্যায়ে লং মার্চ কর্মসূচির প্রস্তুতিকালে পুলিশি হামলায় ১১ জন নারী শিক্ষকসহ ৩৩ জন শিক্ষক আহত হয়েছেন।
শিক্ষকরা বলেন, গত মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) শিক্ষা ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করি। তৃতীয় দিনের অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে ছয় জন শিক্ষককে নিয়ে যাওয়া হয় বৈঠক করার জন্য। বৈঠকে জানানো হয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মন্ত্রণালয় প্রস্তাব পাঠালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এতে শিক্ষকরা আশ্বস্ত হতে না পেরে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের দিকে লং মার্চ শুরু করলে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান দিয়ে হামলা চালায় এবং লাঠিচার্জ শুরু করে। পুলিশের পিটুনিতে শিক্ষকরা রাস্তা ছেড়ে জীবন বাঁচানোর চেষ্টা করেন। পুলিশ ইচ্ছেমতো শিক্ষকদের চড়-থাপ্পড়ও মেরেছেন।
শিক্ষক নাজনীন আক্তার বলেন, পুলিশে শিক্ষকদের পিটিয়ে হাত-পা শরীর থেঁতলে দিয়েছেন। অপ্রয়োজনে একজন শিক্ষককের কানে চড় মেরে আহত করেছেন।
প্রধান সমন্বয়ক মো. মোস্তফা কামাল বলেন, সাউন্ড গ্র্যানেড ও জলকামান মেরে আতঙ্ক তৈরি করে পুলিশ। একপর্যায়ে লাঠি চার্জ শুরু করে। শিক্ষকদের গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে কিছু শিক্ষক পুলিশকে অনুরোধ জানায়, এতে তারা আরও মারমুখী হয়ে ওঠে। একজন শিক্ষক আতঙ্কে পুলিশের পা ধরে অনুরোধ করেন। শিক্ষকদের পুলিশ এভাবে অপমান করেছেন। অথচ আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছিলাম।
এমপিওভুক্তির দাবিতে শিক্ষা ভবনের সামনে টানা তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন বেসরকারি কলেজগুলোর অনার্স-মাস্টার্স স্তরের শিক্ষকরা। কর্মসূচির এক পর্যায়ে তারা শিক্ষা ভবনসহ সচিবালয়ের পুরো সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে ভোগান্তিতে পড়েন জনসাধারণ।
পরে পুলিশের লাঠিচার্জ, টিয়ার গ্যাস ও জলকামান নিক্ষেপের মাধ্যমে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ সদস্যরা।
প্রায় দেড় ঘন্টা পর সচিবালয় সংলগ্ন রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফেডারেশনের আয়োজনে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। পরে বিকাল ৫টায় পুলিশি বাঁধার মুখে ফিরে যান তারা।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে এম সাহাবুদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, শিক্ষকরা সচিবালয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ সড়ক তারা অবরোধ করে বিক্ষোভ করছিলেন।
এমন সংবাদ পেয়ে পুলিশ সদস্যরা সেখানে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেন। বিকাল ৫টা থেকে সেখানে যানচলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত এই আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফেডারেশনের সভাপতি নেকবর হোসেন।পুলিশ সদস্যরা এসে টিয়ার গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান ব্যবহার করে আমাদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে। এই হামলায় আমাদের অন্তত ২০ জন শিক্ষক আহত হয়েছেন। অনেকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠক বিষয়ে তিনি বলেন, সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর আমাদের একটি প্রতিনিধি দল ধানমন্ডিতে গিয়েছেন। সেখানে রাত ৮টায় উপাচার্যের সঙ্গে আমাদের দাবির বিষয়ে আলোচনা হবে।আমাদের দাবি একটাই, আমরা এমপিওভুক্তি চাই।
Posted ৬:২২ অপরাহ্ণ | বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪
শিক্ষার আলো ডট কম | শিক্ষার আলো